ডিভিডেন্ড অর্থ লভ্যাংশ। এক বছরে একটি কোম্পানির তার মুনাফার বা (ইপিএসের) যে অংশ শেয়ারহোল্ডারদের (বিনিয়োগকারীদের) মধ্যে বিতরণ করে তাকেই লভ্যাংশ বা ডিভিডেন্ড বলে। কোম্পানির ইপিএস (শেয়ার প্রতি আয়) থেকে লভ্যাংশ দেওয়ার নিয়ম হলেও, প্রয়োজনে রিজার্ভ (সংরক্ষিত তহবিল) থেকে লভ্যাংশ বিতরণ করা যায়। কোম্পানির আয় বা ইপিএস নেগেটিভ থাকলে ক্যাশ লভ্যাংশ প্রদান করা যায় না তবে স্টক (বোনাস শেয়ার) লভ্যাংশ দেয়া যায়। লভ্যাংশের পেতে ঘোষিত রেকর্ড ডেটের (শেয়ারের মালিকানা নির্ধারণের দিনের) আগে শেয়ার কিনতে হয়।
লভ্যাংশ দুই প্রকার। ক্যাশ (নিজেস্ব মুদ্রায়) বা নগদ লভ্যাংশ এবং স্টক (বোনাস শেয়ার) লভ্যাংশ। আবার একটি কোম্পানি ইচ্ছা করলে, লভ্যাংশ হিসেবে নগদ টাকা বা স্টক (বোনাস শেয়ার) যে কোন একটি অথবা উভয় আকারে দিতে পারে। লভ্যাংশকে সাধারণত শতাংশের হিসাবে প্রকাশ করা হয়। লভ্যাংশ কোম্পানির ফেজভ্যালুর উপরে দেওয়া হয়। কোম্পানির সেকেন্ডারি মার্কেটে, কারেন্ট মার্কেট ভ্যালু যাই হোক না কেন।
স্টক লভ্যাংশকে সাধারণ বিনিয়োগকারীরা বোনাস লভ্যাংশ হিসেবে চেনেন। বোনাস লভ্যাংশ দেওয়ায় কোম্পানির দায় বাড়ে (শেয়ার সংখ্যা বাড়ে) এবং সম্পদ কমে (নেট এ্যাসেট ভেল্যু বা ন্যাভ কমে)। কোম্পানির ব্যবসা না বাড়লে ইপিএস কমে যায়, ফলে শেয়ার প্রাইজও কমে যায়। তবে ভাল আয় সম্পন্ন ফান্ডমেন্টাল কোম্পানির বোনাস লাভজনক হতে পারে।
আর ক্যাশ লভ্যাংশ দিলে কোম্পানির ভবিষ্যতে দায় বাড়েনা (শেয়ার সংখ্যা বাড়ে না) তবে কোম্পানির কাছ থেকে নগত টাকার প্রবাহ কমে যায় বা নগত টাকা কমে যায় (ক্যাশ আউট ফ্লো হয়)। ক্যাশ লভ্যাংশ দেওয়াটা কোম্পানির ফাইন্যানসিয়াল সবলতার লক্ষণ। ক্যাশ লভ্যাংশে শেয়ার না বাড়ায় গত বছরের তুলনায় একই আয়ে ইপিএস কমে না, একই থাকে। কিন্তু বোনাস লভ্যাংশ দিলে গত বছরের তুলনায় একই আয়ে ইপিএস কমে যায়। কারণ শেয়ার সংখ্যা বেড়ে গেছে।
আবার কোম্পানিটা যে শেয়ার প্রতি আয় (ইপিএস) দেখায় সেটা আসলেই সত্য কিনা সেটা বুঝাও একটি উপায় কোম্পানি ক্যাশ লভ্যাংশ দিতে পারছে কিনা।
বাংলাদেশে অনেক কোম্পানি ভাল ও যৌক্তিক লভ্যাংশ দিলেও অনেক কোম্পানি প্রতারণামূলক লভ্যাংশ দেয়। এ প্রতারণায় নানা ধরণ ও কৌশল তারা ব্যবহার করে। তবে সকল কোম্পানি প্রতারক নয় অনেক ভাল কোম্পানি আছে। তাদেরকে প্রতারক কোম্পানির সাথে মিলিয়ে ফেলবেন না। প্রতারক কোম্পানি চিনতে পড়ুন। প্রতারক কোম্পানি চেনার কিছু কৌশল
১. প্রতারণা বুঝার সব থেকে সহজ উপায় হলো ব্যবসা না বাড়িয়ে প্রতি বছর ধারাবাহিকভাবে স্টক লভ্যাংশ দেয়া এবং স্টক লভ্যাংশ প্রদানের হার বৃদ্ধি করে কিন্তু কোন প্রকার ক্যাশ লভ্যাংশ দেয় না। কোন কোম্পানি এটা করলে সন্দেহ বা প্রশ্ন করার যথেষ্ট কারণ আছে যে, কোম্পানিটি যে আয় বা ইপিএস দেখাচ্ছে সেটা উইনডো ড্রেসিং (প্রতারণা) করে দেখাচ্ছে। বস্তবে সে পরিমান ইপিএস কোম্পানির নেই।
২. হঠাৎ নো ডিভিডেন্ড। শেয়ারের দামের ব্যাপক পতন। দুই বা তিন বছর পর শেয়ারের দাম তলানিতে গেলে কোম্পানির ম্যানেজমেন্টের সাথে সংশ্লিষ্ট কেউ বা কয়েকজন সরাসরি বা অন্যকে (গ্যাম্বেলার বা স্মার্ট মানিকে) সহযোগিতার মাধ্যমে নিজেদের নামে বা বেনামে অধিকাংশ শেয়ার কিনে নেয় এবং ম্যানেজমেন্টে বোনাস লভ্যাংশ ঘোষণা করে। একই সাথে কৃত্রিম চাহিদা তৈরি করে। ফলে শেয়ারের দামের ব্যাপক উত্থান ঘটে। আবার ভুলে যাওয়া পুরানো নাটক! উচ্চ দামে ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারীদেরকে শেয়ার ফিডিং (ক্রয় করানো) করানো। এভাবেই চলতে থাকে … ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারীদের আরো ক্ষুদ্র হওয়ার বাস্তব গল্প।
৩. কারণ ছাড়াই ডিভিডেন্ট পে-আউট রেশিও খুবই কম থাকা। এটা কমপক্ষে ৬০ শতাংশ হওয়া উচিৎ। ডিভিডেন্ট পে-আউট রেশিও হলো কোন কোম্পানি যে আয় বা ইপিএস (শেয়ার প্রতি আয়) করে, তার কত শতাংশ বিনিয়োগকারীদেরকে (শেয়ারহোল্ডারদেরকে) লভ্যাংশ আকারে বিতারণ করছে।
যেমন: কোন কোম্পানি ১০ টাকা ইপিএস করে, যদি ৬০ শতাংশ বা ৬ টাকা নগত লভ্যাংশ দেয়, তবে তার ডিভিডেন্ট পে-আউট রেশিও ৬০ শতাংশ। তবে কোম্পানির সম্প্রসারণের প্রকল্প থাকলে লভ্যাংশ কম বা নাও দিতে পারে। সেটা কিন্তু ইতিবাচক।
কারণ লভ্যাংশ না দিয়ে কোম্পানি ঐ টাকা নতুন করে বিনিয়োগ করে, আগামীতে শেয়ারহোল্ডারদেরকে বেশি লভ্যাংশ দিতে পারবে। এটা তখনই ভাল, যখন ঐ কোম্পানির ম্যানেজমেন্ট সৎ ও দক্ষ হয়। প্রতারক ম্যানেজমেন্ট এই ভাল সুযোগটাকে খারাপ উদ্দেশ্যে কাজে লাগিয়ে তাদের নিজেদের পকেট ভারি করে।
৪. ধরুন কোন কোম্পানির পেইড আপ ক্যাপিটাল বিশ কোটি টাকা। তাহলে শেয়ার সংখ্যা হবে (বিশ কোটি ভাগ দশ) ২,০০০০০০০ (দুই কোটি)। দশ টাকা ফেজভেলুর কোম্পানিটির শেয়ারের মার্কেট প্রাইজ (স্বল্পমূলধনী কোম্পানি হওয়ার কারণে) ১০০ টাকা। কোম্পানির মোট শেয়ারের ৬০ শতাংশ (১ কোটি ২০ লাখ) শেয়ার যদি স্পেনসারদের কাছে থাকে এবং কোম্পানিটি যদি ১ টাকা করে আয় বা ইপিএস করে তবে ১০০% ক্যাশ লভ্যাংশ দিলে স্পেনসাররা (বড় বিনিয়োগকারীরা) কত টাকা পাবে? মাত্র ১ কোটি ২০ লাখ টাকা। কিন্তু ১০০% বোনাস ঘোষণা আসলে আমাদের মার্কেটে ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারীদের জ্ঞানের দুর্বলতা থাকার কারণে (বোনাস শেয়ারে তৎক্ষনাৎ শেয়ার প্রতি সম্পদ ও ইপিএস কমে এটি না বুঝা এবং ম্যানেজমেন্টের আসল উদ্দেশ্য না বুঝার কারনে), ঐ দিনেই শেয়ারটির দাম হয়ে যাবে প্রায় ২০০ টাকা বা তার কাছাকাছি।
এখন স্পেনসাররা যদি তাদের ভাগের শুধুমাত্র বোনাস শেয়ার গুলো বাজার দরে বিক্রয় করে, তবে তারা পারে ১ কোটি ২০ লাখ গুণ ১২০ টাকা (ধরি বোনাস সমন্বয় (এক্স ডিভিডেন্ট প্রাইজ) হওয়ার কারণে ২০০ টাকা থেকে দাম কমে ১২০ হয়েছে) অর্থ্যাৎ একশত চুয়াল্লিশ কোটি টাকা! মানে কোম্পানি প্রতিষ্ঠা করতে যেখানে মাত্র ২০ কোটি টাকা লেগেছিল সেখানে এক বছরের বোনাস লভ্যাংশ দিয়েই তার ৭.২ গুন টাকা আয় হচ্ছে! মানে ঐ কোম্পানির মত আরো সাতটি কোম্পানি করা যাবে।
আর স্পেনসারদের কোম্পানিটির মূল মালিকানাতো আছে। এ কারনেই অনেক স্পেনসারা বার বার বোনাস ঘোষণা করে এমন কী, উচ্চ দাম পেলে নিজেদের অংশের সিংহভাগ শেয়ার বিক্রয় করে দেয়। কারণ শেয়ার ধারণ করে থাকলে যে লাভ হবে ভবিষ্যতে, বর্তমান দামে বিক্রয় করলে তার থেকে বেশি মূল্য পাওয়া যাচ্ছে।
৫. হঠাৎ করে বড় আকারে স্টক বা বোনাস লভ্যাংশ ঘোষণা করা একটি প্রতারণা। কিন্তু বড় আকারে নগত লভ্যাংশ দিবে না। বড় স্টক লভ্যাংশ বলতে সাধারণত কোম্পানিটি যে লভ্যাংশ দেয় তার ডবল বা কয়েক ডবল বোনাস লভ্যাংশ দেয়া, যৌক্তিক কারণ বা ব্যাখ্যা ছাড়াই। সাধারণত এমন লভ্যাংশ ঘোষনার উদ্দেশ্য থাকে গ্যাম্বেলারদেরকে গেম করতে সাহায্য করা। ভাল কোম্পানির লভ্যাংশ প্রদানের ধারাবাহিকতা থাকে। জাঙ্ক কোম্পানির লভ্যাংশ প্রদানের ধারাবাহিকতা থাকে না বা কালেভাদ্রে লভ্যাংশ প্রদান করে ইচ্ছাকৃত ভাবে প্রাইজ বাড়ানোর জন্য।
যারা ইতোপূর্বে এভাবে হঠাৎ বড় আকারে স্টক বা বোনাস লভ্যাংশ দিয়েছে তাদের বর্তমান অবস্থা যাচাই করে দেখুন। ডিএসইয়ের ওয়েবসাইডে যেয়ে। যেমন ধরুণ ফ্যামিলি টেক্সয়ের কথা। ২০১৩ সালে কোম্পানিটি ১০০% স্টক লভ্যাংশ দেয়। ফলে পরবর্তীতে কোম্পানিটির আয় বা ইপিএস, ন্যাভ ও প্রাইজ কি পরিমান কমেছে। এই লিংকে ক্লিক করে দেখুন।
৬. যখন কোন কোম্পানির বাজারে সেলস বা আয় থাকে না। তখন কোন কোন কোম্পানির সংশ্লিষ্ট ম্যানেজমেন্টের অসৎ কোন ব্যক্তি বা ব্যক্তিবর্গ অনেক সময় অন্য ভাবে বা ভিন্ন ভাবে টাকা আয়ের পথ খোঁজে। আর এই সুযোগটা করে দেয় গ্যাম্বেলাররা, গোপন লেনদেনের মাধ্যমে (আন্ডা হ্যান্ড ডিলিংয়ের মাধ্যমে)। ইনসাইডার ট্রেডিং করে প্রথমে শেয়ার কালেকশন হবে।
এরপর ধীরে ধীরে কিছু কিছু ভাল সংবাদ আসবে কিন্তু সংবাদগুলো প্রাইজ সেনসেটিভ হলেও অস্পষ্ট। যেমন: কোন কোম্পানির সাথে সমঝোতা (এমওইউ) স্বাক্ষর হয়েছে (সমঝোতা যে কোন সময়ে বাতিল করা যায়), নতুন পণ্য মার্কেটে আসবে (কবে আসবে, সেলস বা আয় কত বাড়বে বলে নাই), নতুন মেশিন আনছে বিদেশ থেকে(এটি কোম্পানিকে আপডেট রাখার জন্য করতে হয়, মূল বিষয় হল মেশিনে কোম্পানির উৎপাদন কত শতাংশ বাড়বে বা আয় কত শতাংশ বাড়বে)। অথবা প্রথম, দ্বিতীয় বা তৃতীয় কোয়াটারের ইপিএস বাড়িয়ে বা কমিয়ে দেখাবে প্রয়োজন মতো (শেয়ার বেচতে হলে বেশি আর কিনতে হলে কমিয়ে দেখাবে)। আর এটা করা খুব সহজ কারণ প্রথম, দ্বিতীয় বা তৃতীয় কোয়াটার অডিট করাতে হয় না।
তারপর বড় আকারে স্টক বা বোনাস লভ্যাংশ ঘোষণা করে এবং কৃত্রিম চাহিদায় অনেক দাম বাড়িয়ে ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারীদেরকে কে শেয়ার ক্রয়ে প্রলুদ্ধ করে তাদের কাছে শেয়ার বিক্রয় করে বড়রা সরে পড়বে। ফলে ব্যাপক দর পতনে ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারীরা আরো ক্ষুদ্র হয়। এভাবেই চলছে …অনেক কারসাজি। এছাড়া বর্তমানে সামাজিক যোগাযোগ ব্যাবহার করে, বিনিয়োগকারীদেরকে নিদির্ষ্ট কোন কোম্পানির শেয়ার কিনতে উদ্বুদ্ধ করা হয়।
৭. ভাল ডিভিডেন্ড গুজোব ছড়িয়ে শেয়ারের দাম বাড়িয়ে ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারীদেরকে শেয়ার ফিডিং করান হয়। কিন্তু ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারীরা তলিয়ে দেখেন না গুজোবে বলা ডিভিডেন্ড দেওয়ার সক্ষমতা ঐ কোম্পানির আছে কিনা বা দিলে পরবর্তী তার নেতিবাচক প্রভাব কী হতে পারে কোম্পানির আয়, সম্পদ, প্রাইজে।
৮. প্রতি বছর বেশি বেশি বোনাস লভ্যাংশ দিয়ে সুক্ষ্ম প্রতারণা করে কোম্পানির ম্যানেজমেন্ট। কয়েক বছর ধারাবাহিকভা বোনাস লভ্যাংশ ঘোষণা এবং আনুপাতিক হরে এই বোনাস লভ্যাংশ বেড়ে, যখন মোট বোনাস ১০০ শতাংশের কাছাকাছি যায়। তখন সব থেকে বেশি তীব্র হয় শেয়ারের দাম, আয়, ন্যাভের পতন। এটা সরাসরি প্রতারণা। বোনাস লভ্যাংশ দেওয়ার থেকে অধিকাংশ ক্ষেত্রে কোন লভ্যাংশ না দেওয়াই ভাল যদি কোম্পানির কোন সম্প্রসারণ প্রকল্প না থাকে।
৯. অনেক সময় পণ্যে উৎপাদন বাদ দিয়ে বোনাস উৎপাদন ম্যানেজমেন্টের মূল উদ্দেশ্য হয় কিছু কোম্পানির। কারণ পণ্যের সেলস নাই বা বাজার নাই বা ঋণের চাপে পণ্য উৎপাদনের স্বল্পমূলধনী টাকাও নাই। তো আর কী করবে বোনাস উৎপাদন করে। আর ঐ বোনাস চড়া দামে বাজারে বিক্রয় করাইতো বেশি লাভ!
১০. ট্যাক্স ফাঁকি দিতে বোনাস দিয়ে প্রতারণা করা হয়। বর্তমান নিয়মানুযায়ী ক্যাপিটাল গেইনের উপর ব্যক্তি বিনিয়োগকারীরে ট্যাক্স নাই কিন্তু ক্যাশ বা নগত লভ্যাংশে উপর ট্যাক্স আছে। ফলে ট্যাক্সের হাত থেকে বাঁচতে অনেক সময় বোনাস লভ্যাংশ দেওয়া হয়।
১১. কোন বিনিয়োগকারী যখন কোন কোম্পানির শেয়ার ক্রয় করে তখন মূলত সে ঐ কোম্পানির শেয়ার প্রতি সম্পদ ক্রয় করে। যে সম্পদকে কাজে লাগিয়ে ম্যানেজমেন্ট আয় করে। কিন্তু বোনাস দেওয়ার পর এ সম্পদই কমে যায় তাহলে আয় বাড়বে কিভাবে? তবে কোম্পানির ম্যানেজমেন্ট সৎ ও দক্ষ হলে সেলস বাড়িয়ে শেয়ার প্রতি আয় বাড়ান সম্ভব। কিন্তু বাস্তবতা হল আমাদের দেশের অধিকাংশ কোম্পানির ক্ষেত্রে দেখা যায় বোনাস দেওয়ার পরে আয় কমতে থাকে।
১২. অধিকাংশ ক্ষেত্রে বোনাস দেওয়ার উদ্দেশ্যই থাকে প্রতারণা। প্রতারণা না হলে বোনাস দেওয়ার পরে ইপিএস বা ব্যবসা বা সেলস বাড়ে না কেন?
১৩. যত ডিভিডেন্ড প্রতারণা তার সবই স্টক বা বোনাস শেয়ার ঘোষণা দিয়ে করা হয়। নগত লভ্যাংশ দিয়ে করা কঠিন ও লস প্রকল্প। কারণ নগত টাকা আউট ফ্লো হবে। ঐ পরিমান টাকাতো কোম্পানি আয়ই করে নাই পাবে কই?
১৪. যে সব কোম্পানি বেশি বোনাস দেয়, সে সব কোম্পানির ইপিএস নিয়ে প্রশ্ন উঠা খুবই যৌক্তিক। এটার প্রমান অনেক সময় পাওয়া যায় ক্যাশ ফ্লো (এনওসিএফপিএস) দেখলে। ভাল ইপিএস করেছে কিন্তু হাতে নগত টাকা (এনওসিএফপিএস) নাই বা নেগেটিভ ফর্মে! তবে ক্যাশ ফ্লো অনেক সময় কোম্পানির সম্প্রসারণ প্রকল্পের কারণেও কম থাকতে পারে।
১৫. মিউচুয়াল ফান্ডের বেলায় বিভিন্ন কোম্পানির শেয়ার থেকে প্রাপ্ত লভ্যাংশ, বন্ড বা ডিবেঞ্চার থেকে প্রাপ্ত সুদ, ক্যাপিটাল গেইন থেকে অর্জিত মুনাফা, ব্যাংকে রাখা অর্থের সুদ ইত্যাদির সমন্বিত আয় থেকে লভ্যাংশ দেয়া হয়। মিউচুয়াল ফান্ডগুলো সাধারণত নগদ লভ্যাংশ দিয়ে থাকে। বাংলাদেশে সংশোধিত মিউচুয়াল ফান্ড আইন অনুসারে স্টক বা বোনাস লভ্যাংশ দেওয়ার সুযোগ আছে। যা এক ধরণের চতুরতা বিনিয়োগকারীদের ঠকানোর জন্য। আমাদের ফেজবুক পেজে লাইক দিয়ে সাথে থাকুন।
লেখকঃ ইমরান হোসেন