ঘরে বাতি জ্বালাতে গিয়ে কিংবা প্রচণ্ড গরমে শীতাতপনিয়ন্ত্রণ (এসি) যন্ত্রের সুবিধা পেতে আপনারও কি বিদ্যুৎ বিলের চোখরাঙানির কথা মনে পড়ে যায়? মিতব্যয়ী হওয়ার চেষ্টায় কম বিদ্যুৎ খরচ করেও মাস শেষে অনেকে দেখেন, বিলের অঙ্কে খুব বেশি পরিবর্তন হয়নি। উপায় কী? গরম এলেই বিদ্যুৎ বিল বেড়ে যায়, কারণ বাতি, ফ্রিজ, কম্পিউটার, ওয়াশিং মেশিন, ওভেন, ব্লেন্ডার, আয়রন মেশিনসহ আরও অনেক কাজে বিদ্যুৎ খরচ বেড়ে যায়। তবে মাস শেষে বিদ্যুতের বিল এলে অনেকের মাথা নষ্ট হয়। এসি ব্যবহার না করেও অনেকের ইউনিট বেশি পুড়েছে। জানেন এর কারণ কী?
বিদ্যুৎ বিল কমানোর কিছু কার্যকরী উপায় রয়েছে যা আমাদের দৈনন্দিন জীবনে অনুসরণ করা যেতে পারে:
- বাসা তৈরির সময় পশ্চিম দিকে রান্নাঘর, আর দক্ষিণ দিকে শোবার ঘর রাখলে ঘরে আলো-বাতাস বেশি ঢোকে, ফলে বাতি ও পাখার সীমিত ব্যবহার করা সম্ভব হয়।
- বাসার প্রতিটি জানালায় রঙিন কাচের ব্যবহার না করে স্বচ্ছ কাচ লাগালে ঘর প্রাকৃতিকভাবে আলোকিত হবে।
- সোলার লাইটের (সৌরবাতি) ব্যবহার করা যেতে পারে। যাদের বাসায় সোলার আছে, তাদের সেটি ব্যবহারে অভ্যস্ত হওয়া জরুরি।
- দিনের আলোর ব্যবহার বাড়াতে হবে। যত ভোরে সম্ভব ঘুম থেকে ওঠা ও রাতে দ্রুত ঘুমিয়ে যাওয়ার অভ্যাস করতে হবে।
- রান্নাঘর ও বাথরুমে পর্যাপ্ত আলো থাকা সত্ত্বেও দিনের বেলা বাতি জ্বালানোর বাজে অভ্যাস বর্জন করা উচিত।
- কাপড় অল্প ময়লা হলেই ওয়াশিং মেশিনে না দিয়ে বেশ কিছু কাপড় জমিয়ে একত্রে ধুয়ে ফেলা যায়।
- বিদ্যুৎ–চালিত যন্ত্র ব্যবহার না করে কিছু পণ্যের ম্যানুয়াল ডিভাইস ব্যবহার করলে বা রান্নাঘরে বিকল্প পদ্ধতি ব্যবহার করলে বিল কম আসবে। যেমন ব্লেন্ডার, এগ বিটার, ফুড প্রসেসর, টোস্টার, স্যান্ডুইচ মেশিন, জুসার ইত্যাদি।
- ঘরে যতই বাতি থাকুক না কেন, লেখাপড়ার প্রয়োজন ছাড়া ঘরে একটি বাতিই যথেষ্ট।
- লেখাপড়ার দরকারে বেশি ওয়াটের বাতি জ্বালিয়ে, অন্যান্য সময় কম ওয়াটের বাতি ব্যবহারের অভ্যাস খরচ কমাতে সাহায্য করবে।
- সেন্সর লাগানো বাতি ব্যবহার করলে প্রয়োজন ও সাশ্রয়—দুটোই যুগলবন্দী হবে দারুণভাবে।
- রান্নাঘরের এক্সহস্ট বা নিষ্কাশন ফ্যান চালিয়ে না রেখে শুধু প্রয়োজনের সময় ব্যবহার করার অভ্যাসের সুফলও আপনি পেতে পারেন।
- কাপড় শুকানোর জন্য অনেকে ফ্যান চালিয়ে রাখেন, এটাও একটা অপচয়।
- ঘরে শীতল আবহ আনতে এসির তাপমাত্রা ২৬–২৭–এর মধ্যে রাখলে আরামদায়ক তাপমাত্রা থাকবে। ইনভার্টার এসির ব্যবহারে বিল কম আসে।
- পিক আওয়ারে (বিকেল ৫টা থেকে রাত ১১টা) বিদ্যুৎ ব্যবহার না করে অফ-পিক আওয়ারে যেকোনো বৈদ্যুতিক সরঞ্জাম ব্যবহার বিল কমানোর একটি কার্যকর কৌশল।
- মোবাইল চার্জার থেকে খোলার পর অবশ্যই সুইচ বন্ধ করতে হবে ।
- দিনে এক ঘণ্টা করে বন্ধ রাখুন ফ্রিজ। যন্ত্রও বিশ্রাম পাবে, বিদ্যুৎও বাঁচবে।
- ব্যবহার করুন সিএফএল বা এলইডি লাইট। এসব লাইটের আলোয় ফিলামেন্টের তুলনায় সার্কিট ব্যবহার হওয়ায় বিদ্যুতের খরচ কমে।
- নিয়ম করে সব যন্ত্রেরই সার্ভিসিং করান সময় মতো। এতে যন্ত্র ভাল থাকে ও কম বিদ্যুৎ টানে।
- পুরনো তার, পুরনো যন্ত্র ব্যবহারে বিদ্যুৎ বিল বাড়ে। তাই ১০-১৫ বছরের পুরনো যন্ত্র বা তার ব্যবহার না। আধুনিক যন্ত্র ব্যবহার করুন।
- যে কোনও বৈদ্যুতিক যন্ত্র কেনার সময় স্টার রেটিংয়ে ভরসা রাখুন। কোনও যন্ত্রের স্টার রেটিং বেশি হলে তার ইউনিট বাঁচানোর ক্ষমতাও ততোধিক।পুরনো তার, পুরনো যন্ত্র ব্যবহারে বিদ্যুৎ বিল বাড়ে। তাই দশ-পনেরো বছরের পুরনো যন্ত্র বা তার ব্যবহার না। আধুনিক যন্ত্র ব্যবহার করুন।
- বেশিরভাগ সময় এসি রিমোট দিয়ে বন্ধ করার পর সুইচ বন্ধ করি না।এতেও কিছুটা অতিরিক্ত ইউনিট পোড়ে।
- এসির তাপমাত্রা ২৪ ডিগ্রির নীচে নামাবেন না। তাতে বেশি ইউনিট খরচ হয়।
- ঘন ঘন এসি চালু ও বন্ধ করবেন না। চালিয়ে কিছুক্ষণ পর বন্ধ করাই নিয়ম।
- রোদ পড়ে এমন জায়গায় এসির আউটলেট রাখবেন না। অনেকে মাথার উপরে একটি শেড করে দেন। এটিও ভুল ধারণা। এসি মেশিন রোদ-বৃষ্টির হাত থেকে বাঁচাতে ঢেকে রাখলে তাতে মেশিন খারাপ হয় তাড়াতাড়ি।
হতাশার অন্ধাকারে ডুবে থাকা মানুষের মনে একটি প্রশ্নই বারবার ঘুরপাক খায়, কেন আমাদের সৃষ্টি করা হলো? কেন পৃথিবীতে এলাম? আমরা কি প্রকৃতির খেলার পুতুল? এ প্রশ্নের উত্তর দিয়ে আল্লাহ বলেন,
الَّذِي خَلَقَ الْمَوْتَ وَالْحَيَاةَ لِيَبْلُوَكُمْ أَيُّكُمْ أَحْسَنُ عَمَلًا ۚ وَهُوَ الْعَزِيزُ الْغَفُورُ.
অর্থ: তোমাদের মধ্যে সৎকর্মে কে অগ্রগামী তা পরীক্ষার জন্যেই তিনি জীবন সৃষ্টি ও মৃত্যুর ব্যবস্থা করেছেন। তিনিই মহাপরাক্রমশালী ও সত্যিকারের ক্ষমাশীল। সূরা মুলক, আয়াত ২।