ডেস্ক রিপোর্টঃ ব্যাংকের বদলে ব্যাংকবহির্ভূত খাত থেকে সরকারের ঋণ বেড়েছে। ট্রেজারি বিল-বন্ড ছেড়ে সরকার ব্যাংকবহির্ভূত খাত থেকে ঋণ করছে। তাতে বিল-বন্ডে বিনিয়োগ করলে এখন ভালো মুনাফা মিলছে। ফলে ব্যাংকে টাকা রাখার চেয়ে ট্রেজারি বিল-বন্ডে বিনিয়োগ অনেক বেশি লাভজনক হয়ে উঠেছে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, দুই বছর মেয়াদি বন্ডে প্রথমবারের মতো সুদহার ১১ শতাংশ ছাড়িয়েছে। গত বুধবার এই বন্ডের সুদহার ছিল ১১ দশমিক ৬০ শতাংশ। এ ছাড়া গত বৃহস্পতিবার বাংলাদেশ ব্যাংকে অনুষ্ঠিত নিলামে ৯১ দিন মেয়াদি ট্রেজারি বিলের সুদহার ছিল ১১ দশমিক ১৫ শতাংশ, যা গত বছরের জুনে ছিল ৬ দশমিক ৭৫ শতাংশ।

এ ছাড়া ১৮২ দিন মেয়াদি ট্রেজারি বিলের সুদহার হয়েছে ১১ দশমিক ২০ শতাংশ, যা গত জুনে ছিল ৭ দশমিক শূন্য ৫ শতাংশ। আর ৩৬৪ দিন মেয়াদি ট্রেজারি বিলের সুদহার বেড়ে হয়েছে ১১ দশমিক ৫০ শতাংশ, যা গত জুনে ছিল ৭ দশমিক ৭৫ শতাংশ।

তবে ট্রেজারি বিল ও বন্ডে বিনিয়োগ করতে হলে ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানে পৃথক হিসাব খুলতে হবে। ব্যাংক বা আর্থিক প্রতিষ্ঠান ব্যক্তির পক্ষে বিল বা বন্ড কিনে দেবে। সুদহার বেড়ে যাওয়ায় সাম্প্রতিক সময়ে বিল-বন্ডে প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগ বেড়েছে। পাশাপাশি ব্যক্তিপর্যায়ে এ খাতে বিনিয়োগে আগ্রহ বাড়ছে।

মূল্যস্ফীতির বর্তমান ঊর্ধ্বমুখী ধারায় মানুষের আয়ের বড় একটা অংশ জীবনযাত্রার খরচ মেটাতেই ব্যয় হচ্ছে। খরচের বাড়তি এ চাপ মোকাবিলার পর কিছু অর্থ থাকলে তা সঞ্চয় করেন। সঞ্চয়ের একটি অংশ ব্যাংকসহ বিভিন্ন খাতে বিনিয়োগ করা হয়। তবে বিনিয়োগের ক্ষেত্রে ভালো মুনাফা প্রাপ্তির আশার পাশাপাশি অর্থের নিরাপত্তার বিষয়টিও এখন গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে।

কারণ, সমবায় সমিতি, ডেসটিনির মতো এমএলএম প্রতিষ্ঠান ও কিছু আর্থিক প্রতিষ্ঠানে উচ্চ সুদের আশায় বিনিয়োগ করে অনেকে ফেরত পাচ্ছেন না। আবার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিএসইসির বেঁধে দেওয়া সর্বনিম্ন মূল্যস্তর বা ফ্লোর প্রাইসের কারণে শেয়ারবাজারেও দীর্ঘদিন ধরে মন্দাভাব বিরাজ করছে। এমন পরিস্থিতিতে তাই নিরাপদ ও ভালো মুনাফার জন্য বিকল্প বিনিয়োগের উৎস হয়ে উঠেছে ট্রেজারি বিল-বন্ড।

বর্তমানে ট্রেজারি বিলের ওপর নির্ভর করে ব্যাংকঋণের সুদহার নির্ধারিত হয়। এখন যে পদ্ধতিতে ঋণের সুদহার নির্ধারিত হচ্ছে, সেটাকে বলা হয় স্মার্ট বা সিক্স মান্থস মুভিং অ্যাভারেজ রেট অব ট্রেজারি বিল। প্রতি মাসের শুরুতে ব্যাংকগুলোকে এই হার জানিয়ে দেয় বাংলাদেশ ব্যাংক। নভেম্বর মাসে স্মার্ট রেট ছিল ৭ দশমিক ৪৩ শতাংশ, যা ডিসেম্বরে বেড়ে হয়েছে ৮ দশমিক ১৪ শতাংশ। স্মার্ট সুদহারের সঙ্গে ব্যাংকগুলো ৩ দশমিক ৭৫ শতাংশ পর্যন্ত সুদ যোগ করতে পারে।

দেশে নিরাপদ বিনিয়োগের অন্যতম প্রধান খাত হিসেবে পরিচিত পাঁচ বছর মেয়াদি বাংলাদেশ সঞ্চয়পত্রে সুদহার ১১ দশমিক ২৮ শতাংশ। তিন মাস অন্তর মুনাফাভিত্তিক সঞ্চয়পত্রের সুদের হার ১১ দশমিক শূন্য ৪ শতাংশ। পরিবার সঞ্চয়পত্রে মেয়াদ শেষে মুনাফা পাওয়া যায় ১১ দশমিক ৫২ শতাংশ হারে।

সূত্রঃ প্রথম আলো

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here