Homeপুঁজিবাজারখাতওয়ারী সংবাদসংকটের মধ্যেও সিমেন্ট খাতে ভালো মুনাফা

সংকটের মধ্যেও সিমেন্ট খাতে ভালো মুনাফা

ডেস্ক রিপোর্টঃ ভালো মুনাফায় ফিরেছে দেশের শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত সিমেন্ট খাতের কোম্পানিগুলো। কোনো কোনো কোম্পানির মুনাফা কয়েক গুণ বেড়েছে। শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত সিমেন্ট খাতের সাত কোম্পানির আর্থিক প্রতিবেদনে এমন তথ্য পাওয়া গেছে। সম্প্রতি কোম্পানিগুলো চলতি ২০২৩–২৪ অর্থবছরের প্রথমার্ধের আর্থিক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। তাতে দেখা যাচ্ছে, তালিকাভুক্ত সাতটি সিমেন্ট কোম্পানির মধ্যে পাঁচটিরই মুনাফা উল্লেখযোগ্য পরিমাণে বেড়েছে।

এমন একসময়ে সিমেন্ট খাতের কোম্পানিগুলো মুনাফায় ফিরল যখন ব্যবসায়ীরা ডলার–সংকটের কারণে কাঁচামাল আমদানির জন্য চাহিদা অনুযায়ী ঋণপত্র (এলসি) খুলতে পারছেন না। এ ছাড়া গ্যাস–বিদ্যুতের সংকটসহ ব্যবসা–বাণিজ্যের ক্ষেত্রে নানামুখী সমস্যায় রয়েছেন বলে জানানা তাঁরা। আবার এক বছর ধরে চলমান উচ্চমূল্যস্ফীতির কারণে সিমেন্টের মতো পণ্যের চাহিদাও কমেছে বাজারে। তারপরও এই খাতের কোম্পানিগুলোর এমন মুনাফায় বিনিয়োগকারীদের মধ্যে কিছুটা সংশয় দেখা দিয়েছে।

তবে খাতসংশ্লিষ্টরা বলছেন, দুটি কারণে সিমেন্ট খাতের কোম্পানিগুলো ব্যবসায়ে ভালো করেছে। প্রথমত, ২০২২ সালের শেষার্ধে ডলারের যে অস্বাভাবিক মূল্যবৃদ্ধি হয়েছিল, সেই ধাক্কা অনেকটা আত্তীকরণ করে ফেলেছে কোম্পানিগুলো। দ্বিতীয়ত, কাঁচামাল–সংকটের কারণে ছোট–বড় কিছু কোম্পানির উৎপাদন সক্ষমতা কমে যাওয়ায় সেই বাজার দখল করেছে অন্যরা। তাতে যাদের উৎপাদন স্বাভাবিক ছিল, তাদের বিক্রি বেড়েছে। এ ছাড়া ডলারের মূল্যবৃদ্ধির কারণে পণ্যের দামও বাড়িয়েছে কোম্পানিগুলো। সেই সুফলও মিলছে এখন।

শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত প্রিমিয়ার সিমেন্ট ২০২২ সালের শেষ ছয় মাস জুলাই–ডিসেম্বরে প্রায় ২৬ কোটি টাকা লোকসান করেছে। তাতে ওই সময়ে কোম্পানিটির শেয়ারপ্রতি আয় বা ইপিএস ২ টাকা ৪৫ পয়সা ঋণাত্মক হয়। অর্থাৎ ২০২২ সালের শেষ ছয় মাসে কোম্পানিটি শেয়ারপ্রতি আড়াই টাকা লোকসান হয়েছিল। সেই লোকসান কাটিয়ে গত বছরের শেষ ছয় মাসে কোম্পানিটি শেয়ারপ্রতি ২ টাকা ৬৩ পয়সা মুনাফা করে।

আর্থিক প্রতিবেদন অনুযায়ী, গত বছরের শেষার্ধে প্রিমিয়ার সিমেন্ট ১ হাজার ২৮৯ কোটি টাকার ব্যবসা করেছে। আগের বছর একই সময়ে কোম্পানিটি ৮৮৮ কোটি টাকা ব্যবসা করেছিল। এই ব্যবসা করতে গিয়ে কোম্পানিটির পণ্য উৎপাদনে খরচ হয়েছিল ৭৯৮ কোটি টাকা। অর্থাৎ প্রিমিয়ার সিমেন্ট ২০২২ সালে শেষ ছয় মাসে যত টাকার ব্যবসা করেছে, তার ৯০ শতাংশ অর্থ পণ্য উৎপাদনে খরচ হয়ে গেছে। এ ছাড়া ওই সময়ে ডলারের অস্বাভাবিক মূল্যবৃদ্ধির কারণে ৪০ কোটি টাকা বাড়তি লোকসান হয় কোম্পানিটির। সেই হিসাবে, কোম্পানিটি পণ্য বিক্রি করে যে আয় করেছিল, ছয় মাসে তার প্রায় পুরোটাই পণ্য উৎপাদনের খরচ ও ডলারের বাড়তি দামের পেছনে খরচ করতে হয়।

আর্থিক প্রতিবেদন অনুযায়ী, ২০২২ সালের শেষ ছয় মাসের তুলনায় গত বছরের শেষ ছয় মাসে কোম্পানিটির পণ্য উৎপাদন ও ডলারে বাড়তি খরচ কমেছে। এতে অর্ধবার্ষিক হিসাবে ভালো মুনাফা করেছে কোম্পানিটি।

বহুজাতিক কোম্পানি হাইডেলবার্গ সিমেন্টও লোকসান থেকে মুনাফায় ফিরেছে। কোম্পানিটি ২০২২ সালের (জানুয়ারি–সেপ্টেম্বর) প্রথম ৯ মাসে ২৪ কোটি টাকার বেশি লোকসান করেছিল। সেখানে গত বছরের একই সময়ে এসে কোম্পানিটি ৫০ কোটি টাকার বেশি মুনাফা করেছে। এক বছরের ব্যবধানে কোম্পানিটির মুনাফা বেড়েছে তিন গুণেরও বেশি।

তালিকাভুক্ত সিমেন্ট কোম্পানিগুলোর মধ্যে মুনাফায় সবচেয়ে বেশি প্রবৃদ্ধি হয়েছে ক্রাউন সিমেন্টের। এক বছরে কোম্পানিটির মুনাফা বেড়ে সাড়ে সাত গুণ হয়েছে। ২০২২ সালের জুলাই–ডিসেম্বরে কোম্পানিটি মুনাফা করেছিল ৯ কোটি ৪৩ লাখ টাকা, যা গত বছরের শেষ ছয় মাসে বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৭১ কোটি টাকা।

সূত্রঃ প্রথম আলো

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

৭ দিনে সর্বাধিক পঠিত

এ যাবৎ কালের সর্বাধিক পঠিত